তারাবির নামাজ ৮ নাকি ২০ রাকাত
তারাবিরনামাজ সম্পর্কে ইসলামী উলামাদের মধ্যে কিছু মতভেদ আছে। সাধারণত, ঐতিহ্যগতভাবে মুসলিমরা ৮ রাকাত তারাবি নামাজ পড়েন, যা হযরত উমর (রাঃ) এর সময় থেকে প্রচলিত। তবে, ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়াও কিছু জায়গায় প্রচলিত, বিশেষত মসজিদে জামাতের সঙ্গে।
এটি মূলত ঐতিহ্য এবং স্থানীয় অনুশীলনের উপর নির্ভর করে। ইসলামে, দুইটি সংখ্যাই বৈধ। হাদিসে সরাসরি ২০ রাকাতের উল্লেখ না থাকলেও, অনেক ফিকহি মতামত আছে যে, দুইটি সংখ্যাই (৮ রাকাত বা ২০ রাকাত) সঠিক হতে পারে।
- তারাবির নামাজ কীভাবে এলো
- তারাবির নামাজের নিয়ম, নিয়ত ও দোয়া
- তারাবির নামাজ ৮ নাকি ২০ রাকাত
- তারাবীহ অর্থ: রমজান ও তারাবির নামাজের ফজিলত
- তারাবির নামাজ কত রাকাত এবং কিভাবে পড়তে হয়?
তারাবির নামাজ কীভাবে এলো
তারাবির নামাজ ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ নফল (ঐচ্ছিক) নামাজ, যা রমজান মাসে রাত্রিকালীন সময়ে পড়া হয়। এটি রমজান মাসে প্রতি রাতে ২০ রাকআত পড়া হয়, তবে কখনো কখনো ৮ রাকআতও পড়া হয়। তারাবির নামাজের বিশেষত্ব হল, এটি রমজান মাসে ইফতারি এবং শীরির পর মুসলমানদের জন্য অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে রাখা হয়।
তারাবি শব্দটি আরবি "تَرَاوِيح" থেকে এসেছে, যার অর্থ "বিশ্রাম নেওয়া" বা "আরাম করা"। এটি নামাজের মধ্যে বিশ্রাম গ্রহণের প্রতি ইঙ্গিত করে, কারণ রমজানের রাত্রিকালীন নামাজের মধ্যে প্রতি চার রাকআতের পর মুসলমানরা কিছু সময় বিশ্রাম নেন।
তারাবির নামাজের প্রবর্তন সম্পর্কে ইসলামি ইতিহাসে বলা হয়:
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগে: তাঁর সময়, তারাবির নামাজ প্রথমে সম্মিলিতভাবে মসজিদে পড়া হয়নি। একদিন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) তারাবি নামাজ মসজিদে জামাতে (সমবেতভাবে) পড়িয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী কিছুদিনের মধ্যে তিনি এটি জামাতে না পড়ার সিদ্ধান্ত নেন, কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে, মুসলমানরা হয়ত এটি ফরজ মনে করবে।
তাই তিনি তা বাড়ি বাড়ি অথবা একা একা পড়তে উৎসাহিত করেন।খিলাফত পরবর্তী সময়: হজরত উমর (র.)-এর খিলাফতে, উমর (র.) তারাবি নামাজ মসজিদে জামাতে (সমবেতভাবে) পড়ানোর জন্য ব্যবস্থা করেন এবং তা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ঐতিহাসিকভাবে স্থির হয়ে যায় যে, রমজান মাসে তারাবির নামাজ জামাতে পড়া হবে।আজকাল, পৃথিবীর প্রায় সকল মুসলিম দেশেই রমজান মাসে তারাবির নামাজ জামাতে মসজিদে পড়া হয়ে থাকে।
তারাবির নামাজের নিয়ম, নিয়ত ও দোয়া
তারাবির নামাজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নফল নামাজ, যা রমজান মাসে মসজিদে জামাতে আদায় করা হয়। এটি রমজান মাসের রাত্রে পড়া হয় এবং সাধারণত ২০ রাকাত হয়ে থাকে (কিন্তু কিছু মসজিদে ৮ রাকাতও হয়ে থাকে)। এর নিয়ম, নিয়ত ও দোয়া সম্পর্কে জানানো হলো:
১. তারাবির নামাজের নিয়ম:
সালাতের সময়: তারাবির নামাজ রমজান মাসের রাতে ইশার পর শুরু করা হয়।
রাকাত: সাধারণত ২০ রাকাত পড়া হয়, তবে ৮ রাকাতও পড়া যায়।
প্রতিটি রাকাতে ফাতিহা এবং সুরা: প্রতিটি রাকাতে সুরা আল-ফাতিহা পড়ার পর একটি সুরা পড়া আবশ্যক।
তাশাহহুদ ও সালাম: প্রতি দুই রাকাত পর তাশাহহুদ পড়তে হয় এবং শেষে সালাম দিতে হয়।
আল্লাহু আকবার: নামাজ শুরু করার সময় "আল্লাহু আকবার" বলে নামাজ শুরু করতে হয়।
২. তারাবির নামাজের নিয়ত:
তারাবির নামাজের নিয়ত মনের মধ্যে করতে হয়। শব্দ করে বলার প্রয়োজন নেই, তবে কিছু মুসলিম শব্দ করে নিয়ত করেন। নিয়ত এমন হতে পারে:
নিয়ত:
"নাওয়াইটু আন আউলিয়া সালাত তেরাবীহি লিল্লাহি তায়ালা"
(আমি তারাবির নামাজের নিয়ত করছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য)
এটি মনের মধ্যে দৃঢ়ভাবে মনে রাখতে হবে যে আপনি নামাজ পড়তে যাচ্ছেন এবং এটি রমজান মাসের বিশেষ নফল নামাজ।
৩. তারাবির নামাজের দোয়া:
তারাবির নামাজের জন্য কোন নির্দিষ্ট দোয়া নেই, তবে আপনি রামাজান মাসে বিশেষ দোয়া পড়তে পারেন। কিছু সাধারণ দোয়া যা তারাবির নামাজের পর পড়া হয়, তা হলো:
কোনো দোয়া গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকলে:
"اللهم تقبل منا رمضان"
(আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল মিনা রামাদান)
(হে আল্লাহ, আমাদের রমজান মাস কবুল করুন।)
আরেকটি দোয়া:
"اللهم اجعلنا من عتقاء رمضان"
(আল্লাহুম্মা আজিলনা মিন আত্তাক্বা রামাদান)
(হে আল্লাহ, আমাদের রমজান মাসের মুক্তি প্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন।)
এছাড়া আপনি নিজের ব্যক্তিগত দোয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। তারাবির নামাজে বিশেষ দোয়া বা যিকির করার সময়, রমজানের রহমত ও বরকত কামনা করা যায়।
তারাবির নামাজ ৮ নাকি ২০ রাকাত
তারাবির নামাজ সম্পর্কে ইসলামী শাস্ত্র ও প্রচলিত রীতির মধ্যে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। পৃথিবীজুড়ে মুসলিমদের মধ্যে তারাবি নামাজে কত রাকাত পড়া উচিত তা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। কেউ ৮ রাকাত পড়েন, আবার কেউ ২০ রাকাত পড়েন। তবে, সঠিক ফতোয়া বা ইসলামী শাস্ত্র অনুযায়ী এর মধ্যে কোনটা গ্রহণযোগ্য, তা নির্ধারণে ইসলামী স্কলাররা বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন।
তারাবি নামাজের গুরুত্ব:
তারাবি নামাজ হলো রমজান মাসের রাতের সুন্নত নামাজ। রমজান মাসের প্রতিটি রাতেই এটি পড়া সুন্নত। এর নাম “তারাবি” কারণ এটি দীর্ঘ সময় ধরে পড়া হয়, যা মুসলিমদের শরীর ও মনকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে মনোনিবেশ করতে সহায়ক হয়। এটি সাহরির পর এবং ইফতারের পরে পড়া হয়। তারাবি নামাজ মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বিশেষ ইবাদত, যা রমজানের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব বাড়ায়।
৮ রাকাত নাকি ২০ রাকাত:
মুসলিমদের মধ্যে তারাবি নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। সাধারণভাবে, তারাবি নামাজের সংখ্যা ৮ রাকাত বা ২০ রাকাত হিসেবে পড়া হয়ে থাকে।
১. ৮ রাকাত:
কিছু মুসলিম সম্প্রদায়, বিশেষত যারা শাফি মাজহাবের অনুসারী, তারা তারাবি নামাজে ৮ রাকাত পড়া prefer করেন। এই মতামত অনুযায়ী, তারাবি নামাজের সঠিক রাকাত সংখ্যা ৮ রাকাত হওয়া উচিত। এর ভিত্তি হলো, হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত যে, রাসূল (সা.) রমজান মাসে সাধারণত ৮ রাকাত তারাবি নামাজ পড়তেন। তবে, এর পরিপূরক হিসেবে ২০ রাকাত পড়ার জন্যও কোনো নির্দিষ্ট হাদিস নেই।
২. ২০ রাকাত:
আরেকটি মতামত হলো, ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়া। এটি সাধারণত হানাফি মাজহাবের অনুসারীদের মধ্যে প্রচলিত। তারা মনে করেন যে, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, "যে ব্যক্তি রমজান মাসে ইমামের পিছনে তারাবি নামাজ পড়বে, তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে।" অতএব, ২০ রাকাতের গুরুত্ব এখানেই বেশি মনে করা হয়। অধিকাংশ মসজিদে ইমামরা ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়ান, যা মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
তারাবির নামাজের প্রতি বিধান:
তারাবি নামাজের সংখ্যা বিষয়ে সঠিক নির্ধারণ ইসলামী শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। অনেক ইসলামিক স্কলাররা জানিয়েছেন যে, তারাবি নামাজের সংখ্যা নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটি স্থানীয় ঐতিহ্য, সমাজের চাহিদা এবং মুসলিমদের মাঝে প্রচলিত অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। ইসলাম কোনোটাই নির্ধারণ করে দেয়নি যে, তারাবি নামাজে ৮ রাকাত বা ২০ রাকাত পড়া বাধ্যতামূলক।
এছাড়া, জামাতের সাথে নামাজ পড়া উত্তম বলে বিবেচিত হলেও কেউ চাইলে একা একা নামাজ পড়তে পারেন। তবে জামাতের নামাজের আলাদা বরকত রয়েছে, বিশেষত রমজান মাসে।
তারাবীহ অর্থ: রমজান ও তারাবির নামাজের ফজিলত
তারাবীহ শব্দটি আরবি "تَرَاوِيح" থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো "আরাম করে নামাজ পড়া" বা "বিশ্রাম নিয়ে নামাজ পড়া"। এটি মূলত রমজান মাসে বিশেষ রাতের নামাজ, যা মুসলমানরা রমজান মাসের প্রতি রাতে ইশা নামাজের পর পড়েন।
রমজান মাসে তারাবীহ নামাজের ফজিলত:
১. এটি এক ধরনের সুন্নত নামাজ:
রমজান মাসে তারাবীহ নামাজ পড়া সুন্নাত মুকাদ্দা (অর্থাৎ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন সুন্নত) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এটি রোজার সাথে সম্পর্কিত এবং এর মাধ্যমে ইবাদত ও নেকি লাভ করা যায়।
২. জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার মাধ্যম:
হাদীস থেকে জানা যায় যে, "যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমান ও ইখলাসের সাথে তারাবীহ নামাজ পড়বে, তার পেছনে সমস্ত পাপ মাফ হয়ে যাবে" (সহীহ বুখারি)। এটি মুসলিমদের জন্য একটি দারুণ সুযোগ, যেটির মাধ্যমে তারা অতীত পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে।
এটি আল্লাহর কাছে নৈকট্য অর্জন:
তারাবীহ নামাজ মুসলমানদের জন্য আল্লাহর কাছে নৈকট্য লাভের একটি পথ। এতে রমজান মাসের বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। যারা তারাবীহ নামাজ নিয়মিত পড়েন, তারা আল্লাহর সঙ্গে একটি বিশেষ সম্পর্ক গড়তে পারেন।
রমজান মাসের গুরুত্ব:
রমজান মাস পবিত্র কোরআন নাযিলের মাস। আল্লাহ তাআলা কোরআনের মাধ্যমে মানবজাতির হেদায়াতের পথ দেখিয়েছেন। তারাবীহ নামাজে কোরআন পাঠের মাধ্যমে মুসলমানরা কোরআনের প্রতি আনুগত্য এবং তার শিক্ষাকে নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করেন।
নফল ইবাদত:
এটি একটি নফল (ঐচ্ছিক) ইবাদত, কিন্তু তার পরও এটি পালন করে বড় সওয়াব অর্জন করা যায়, বিশেষত রমজান মাসে যখন আল্লাহ তাআলা সবার ইবাদতকে গুণিত সওয়াব দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
তারাবীহ নামাজের বিষয়:
কত রাকআত:
তারাবীহ নামাজ সাধারণত ২০ রাকআত হয়, তবে এটি ৮ রাকআতও হতে পারে। ইসলামের প্রথম যুগে এটি ৮ রাকআত ছিল, পরে ২০ রাকআত করার প্রচলন শুরু হয়। কোন সংখ্যাটি করা হবে, তা স্থানীয় রীতি অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
কিভাবে পড়বেন:
তারাবীহ নামাজ ইশা নামাজের পর শুরু হয়। একে একে প্রতিটি রাকআত পড়া হয় এবং হঠাৎ বিশ্রাম নেয়া হয় মাঝে মাঝে, যার কারণে "তারাবীহ" শব্দটি এসেছে (বিশ্রাম নিয়ে নামাজ পড়া)।
এভাবে, তারাবীহ নামাজ রমজান মাসে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের, পাপ মোচনের এবং নেকির পরিমাণ বৃদ্ধি করার একটি বিশেষ সুযোগ প্রদান করে।
তারাবির নামাজ কত রাকাত এবং কিভাবে পড়তে হয়?
তারাবির নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নফল (ঐচ্ছিক) নামাজ, যা রমজান মাসে মাসিক রোজা রাখার পর তারাবির রাতে পড়তে হয়। এই নামাজ মসজিদে সাধারণত জামাতে পড়া হয়, তবে এককভাবে (আলাদা) পড়া যেতে পারে। তারাবি নামাজ রমজান মাসে বিশেষভাবে পালিত হয় এবং এটি ইসলামিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে আমরা তারাবি নামাজের সংখ্যার রাকাত, এর নিয়মাবলী এবং পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব।
তারাবি নামাজের রাকাত
তারাবি নামাজের রাকাতের সংখ্যা সাধারণত ২০টি। তবে, কিছু মাযহাব বা ঐতিহ্য অনুসারে ৮টি রাকাতেও তারাবি নামাজ পড়া হয়ে থাকে। সবচেয়ে পরিচিত রীতি হলো ২০ রাকাত, যা সাধারণত মসজিদে জামাতে পড়া হয়।
তারাবি নামাজের পদ্ধতি
তারাবি নামাজ পড়ার নিয়মাবলী প্রায় সবার জন্য একরকম, তবে কিছু রীতি-প্রথা মাযহাবের ভিত্তিতে ভিন্ন হতে পারে। নিচে তারাবি নামাজ পড়ার পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হলো:
১. নিঃশ্বাস এবং সাহরি
তারাবি নামাজের আগে সাহরি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সাহরি খেয়ে নামাজ পড়লে নামাজের জন্য শক্তি অর্জিত হয়। সাহরি শেষ করার পর পরবর্তী নামাজের প্রস্তুতি নিতে হবে।
২. উত্তম সময়ে নামাজ পড়া
তারাবি নামাজ রাতে পড়তে হয়, যা আযানের পর থেকে শুরু হয়। তবে সেহরি শেষ হওয়ার আগেই নামাজটি শেষ করা উচিত। অনেক মুসলিম সাধারণত ইশা নামাজের পর তারাবি নামাজ শুরু করে।
৩. তারাবি নামাজের শুরু
তারাবি নামাজ সাধারণত দুই রাকাত করে পড়া হয়, অর্থাৎ প্রথমে দুটি রাকাত পড়া হয় এবং এরপর একে একে ২০ রাকাত পূর্ণ করা হয়। নামাজের শুরুতে, আপনি নিয়মিত নফল নামাজের মতোই তাকবির তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) বলে নামাজ শুরু করবেন।
৪. রাকাতে কুরআন তিলাওয়াত
তারাবি নামাজে সাধারণত কুরআন পাঠ করা হয়। এক একটি রাকাতে আপনি কিছু আয়াত পড়বেন। রাকাতের শেষের দিকে বা কিছু ক্ষেত্রে কুরআন সম্পূর্ণ তিলাওয়াত করা হয়। যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হবে, তখন যদি মসজিদে জামাতে নামাজ পড়েন, তাহলে ইমাম তিলাওয়াত করবেন এবং মুসল্লিরা তার পিছনে শুনবেন।
৫. সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ
যখন ২০টি রাকাত সম্পূর্ণ হয়, তখন সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা হয়। তারাবি নামাজ শেষে ঐতিহ্যগতভাবে দু'আ (প্রার্থনা) করা হয়, বিশেষত রমজানের শেষের দিকে আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়।
তারাবি নামাজের গুরুত্ব
রমজান মাসে তারাবি নামাজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এই মাসটি বিশেষ করে কুরআনের নাযিলের মাস হিসেবে পরিচিত, তাই তারাবি নামাজের মাধ্যমে কুরআন তিলাওয়াত করা হয়। তা ছাড়া, রমজান মাসে তারাবি নামাজে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় প্রেরণা এবং বিশ্বাসে আরো শক্তিশালী হতে পারে।
তারাবি নামাজের দোয়া
তারাবি নামাজের পরে মুসলিমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। রমজান মাসে বিশেষভাবে দোয়া গ্রহণযোগ্য বলে বিশ্বাস করা হয়। অতএব, এই সময়টি আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়ার এবং তাঁর রহমত লাভ করার বিশেষ সুযোগ হয়ে থাকে।
তারাবির নামাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
তারাবি নামাজে সাধারণত ২০টি রাকাত পড়া হয়, তবে কিছু মাযহাবে ৮টি রাকাতও পড়া যায়।
নামাজের প্রথম রাকাত শুরু করার সময় তাকবির তাহরিমা বলা হয়।
নামাজে কুরআনের অনেক আয়াত তিলাওয়াত করা হয়।
তারাবি নামাজ একে একে দুই রাকাত করে পড়া হয়।
নামাজ শেষে দোয়া করা হয়, বিশেষত রমজান মাসের শেষের দিকে।
তারাবি নামাজ রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মুসলিমদের জন্য এক বিশেষ সুযোগ, যেখানে তারা কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে এবং আল্লাহর কাছ থেকে তাঁর রহমত ও ক্ষমা লাভের জন্য দু'আ করতে পারে। নিয়মিত তারাবি নামাজ পড়া আমাদের ধর্মীয় জীবনে এক বিশাল প্রভাব ফেলে, যা আমাদের ইবাদতের গুরুত্ব এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করে।
উপসংহার:
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তারাবি নামাজের রাকাত সংখ্যা ৮ বা ২০ রাকাত পড়া জায়েজ এবং কোনো মতামতই ইসলামী শরিয়তের পরিপন্থী নয়। সুতরাং, মুসলমানদের উচিত যে কোনো একটি রাকাত সংখ্যা নির্বাচন করা, যা তাদের জন্য আরামদায়ক এবং তাদের ঈমানী অবস্থা বাড়ায়।এছাড়া, যে কোনো কিছুই পবিত্র কুরআন বা হাদিসের বিরোধী না হলে, মুসলমানরা ঐতিহ্য অনুযায়ী তাদের সম্প্রদায়ের রীতি অনুসরণ করতে পারেন। সর্বোপরি, তারাবি নামাজের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর কাছ থেকে বরকত লাভ এবং রমজানের পবিত্রতা অর্জন করা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url