২০২৪ সালের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা কত টাকা
প্রিয় পাঠক,টাকা দিয়ে যাকাতুল ফিতর আদায় হবে কিনা এ সম্পর্কে যারা জানতে চাচ্ছেন কিন্তু বিভিন্ন ওয়েবসাইট খোঁজাখুঁজি করার পরেও জানতে পারতেছেন না তাদের জন্য আজকের এই কনটেন্ট।আজকের এই কনটেন্ট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
ফিতরা ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন কত টাকা এ সম্পর্কে আজকের এই কনটেন্টে আলোচনা করা হবে।তাই এ বিষয়ে জানতে হলে আজকের এই কনটেন্টটি পুরোটাই মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।যদি পুরোটা মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন আশা করি উপকৃত হবেন।
ভূমিকা
পবিত্র মাহে রমজান মাসে দীর্ঘ একমাস রোজা পালন করার পর ধনী-গরীব সবাই সমান ভাগে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারি এজন্য আল্লাহতালা সাদকাতুল ফিতর এর বিধান করেছেন।ইসলামিক অনুশাসনের এক অনন্য নিদর্শন ফিতরা।সাদকাতুল ফিতর দ্বিতীয় হিজরের শাবান মাসে লিপিবদ্ধ হয়।এটি অসহায় গরীব দুঃখীর ন্যায্য পাওনা।
এখানে ক্লিক করুনঃরোজার নিয়ত করা কি ফরজ
রমজান ফিতরা ও ঈদ এক সূত্রে গাথা।ফিতরার মধ্যেই আছে গরিব প্রতিবেশীর আনন্দ ও ঈদ উৎসব।রমজান মাসে ঈদের আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম।ঈদের দিন সকালেও যদি কারো কাছে নেশাব পরিমাণ সম্পদ সাড়ে সাত ভরি সোনা,সাড়ে ৫২ ভরি রুপা,থাকে তবে তাকে তার নিজের ও পরিবারের ছোট বড় সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।
- কার জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব
- সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা কি ওয়াজিব
- ফিতরা কাদের দেওয়া যাবে
- ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা কত টাকা
- টাকা দিয়ে যাকাতুল ফিতর আদায় হবে কিনা
কার জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব
আল্লাহর হাবিব রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন মুসলমানদের মধ্য থেকে সামর্থ্যবান সবার জন্য সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।সাদাকাতুল ফিতর যার সামর্থ্য আছে ছোট বড় স্বাধীন পরাধীন নারী পুরুষ সবার উপর ওয়াজিব যার সামর্থ্য আছে তাকেই দিতে হবে।
এমন না যে আপনি প্রাপ্ত বয়স্ক আপনি আর আপনার স্ত্রী আপনি আদায় করলেন আপনার ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আদায় করলেন না,না এমনটা করা যাবে না।আপনার ঘরে যদি ছয় মাসের ছোট্ট দুধ খাই এরকম বাচ্চা থাকে সে বাচ্চা পক্ষ থেকে আপনি সাধারণত আদায় করে দেবেন।এটা আদায় করার নিয়ম হচ্ছে রমজানের শেষের দিকে।
ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে যে ব্যক্তি স্বাধীনতার ভেতর আদায় করবে সে ফিতরার সোয়াব পাবেন।আর ঈদের নামাজের পরে যদি কেউ সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে।তাহলে তার এটা অন্যান্য মাসের দানের সমান সোয়াব হবে।সাদাকাতুল ফিতরের যে তাৎপর্য বা সওয়াব সেটা কিন্তু তখন শেয়ার পাবে না।এজন্য সাদাকালো ভেতর ঈদ আসার দুই তিন দিন আগ থেকে দেওয়া শুরু করবেন।সাদিকুল ফিতরের ডেট লাইন হচ্ছে ঈদের নামাজ।ঈদের নামাজের পর আর সাদকাতুল ফিতর হবে না।
সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা কি ওয়াজিব
পবিত্র মাহে রমজান মাসে দীর্ঘ একমাস রোজা পালন করার পর ধনী-গরীব সবাই সমান ভাগে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারি এজন্য আল্লাহতালা সাদকাতুল ফিতর এর বিধান করেছেন।সাদকাতুল ফিতর আরবি শব্দ।সাদকা অর্থ দান আর ফিতর অর্থ রোজা ভেঙ্গে পানাহারের বৈধতা।নবী করীম সাল্লাহু সাল্লাম সাতখায়ের ফিতরকে এই জন্য ওয়াজিব বলেছেন যে,
রমজানের রোজা পালন কালীনসময়ে যে সমস্ত ভুলভ্রান্তি হয়েছে সাদকায়ে ফিতর দ্বারা ওই সমস্ত কার্যাবলী কে কাফফারা করা হয়ে গেল।এর দ্বারা ফায়দা হল রোজা পালনকারী সময় যদি কোন অপূর্ণতা থাকে এ সাদগাতুল ফিতরের বদলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সেই অপূর্ণতাকে পূর্ণতা করে দিবেন।
ফিতরা কাদের দেওয়া যাবে
ইসলামিক অনুশাসনের এক অনন্য নিদর্শন ফিতরা।সাদকাতুল ফিতর দ্বিতীয় হিজরের শাবান মাসে লিপিবদ্ধ হয়।এটি অসহায় গরীব দুঃখীর ন্যায্য পাওনা।রমজান ফিতরা ও ঈদ এক সূত্রে গাথা।ফিতরার মধ্যেই আছে গরিব প্রতিবেশীর আনন্দ ও ঈদ উৎসব।রমজান মাসে ঈদের আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম।
ঈদের দিন সকালেও যদি কারো কাছে নেশাব পরিমাণ সম্পদ সাড়ে সাত ভরি সোনা,সাড়ে ৫২ ভরি রুপা,থাকে তবে তাকে তার নিজের ও পরিবারের ছোট বড় সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ রুহুল আমিন এর সভাপতি কে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবং ইসলামী শরীয়া মতে আটা জব কিসমিস খেজুর পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর মাধ্যমে যেকোনো একটি দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়।
আসুন আমরা জেনে সাদাকাতুল ফিতর কি ও কেন কাকে দেওয়া যাবে কে পাবে না কার জন্য এটা আদায় করতে হবে।ফিতর বা সাদকাতুল ফিতর হল সেই নির্ধারিত সাদকা,যা ঈদের নামাজের আগে প্রদান করতে হয়।ঈদের দিন সকালে যিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবেন,তার ও তার পরিবারের সকল সদস্যের জন্য ফিতরা আদায় করা তার প্রতি ওয়াজিব।তাছাড়া নিসাপ পরিমাণ সম্পদের মালিক নন তার জন্য ফিতরা আদায় করা সুন্নত ও নফল ইবাদত।
এখানে ক্লিক করুনঃরোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া
একজন অন্যজনের পিতা আদায় করতে পারবেন।যাদের যাকাত দেওয়া যায় তাদেরকে ফিতরাও দেওয়া যাবে।ফিতরা নির্ধারিত খাদ্য সামগ্রী বা তার মরলে টাকায়ও আদায় করা যায়।পিতা-মাতা বা ঊর্ধ্বতন ছেলেমেয়ে কিংবা অধস্থন এবং যার ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে যেমন ক্রীতদাস স্ত্রী তাদের ফিতরা প্রদান করা ওয়াজিব।ইনসাফ হল যারা যে চালের ভাত খান যে খেজুর দ্বারা ইফতার করেন তারা সেই সমমানের বা সমমূল্য ফিতরা আদায় করবেন।
২০২৪ সালের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা কত টাকা
২০২৪ সালে রোজার ঈদে বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য,সর্বনিম্ন হার কত এবং সর্বোচ্চ হার কত তা জানিয়ে দেবো আজকের এই কনটেন্টে।গত বৃহস্পতিবার একুশ মার্চ রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাই ১৪৪৫ হিজরনের সাদকাতুল ফিতরের এর হার নির্ধারণ করা হয়।
এতে ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের ফিতরার হার জানান।ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য রোজার ঈদে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।নাবালক ছেলেমেয়েদের পক্ষ থেকে বাবাকে এই ফিতরা দিতে হয়।আর তা দিতে হয় ঈদুল ফিতরের নামাজের আগেই।
মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী গম আটা খেজুর কিসমিস পনির ও জবের যেকোনো একটি পণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ বাজার মূল্যে ফিতরা হিসেবে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করতে পারবেন।
আটার ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম।
খেজুর কিসমিস পনির ও জবের ক্ষেত্রে তিন কেজি ৩০০ গ্রামের মাধ্যমে ফিতরা আদায় করা হয়।
এসব পন্যের বাজার মূল্য হিসাব করে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।দেশের সব বিভাগ থেকে সংগ্রহীত আটা জব খেজুর কিসমিস ও পুনির সর্বোচ্চ বাজার মূল্যের ভিত্তিতে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে নির্ধারিত ফিতরার হার ছিল উন্নতমানের আটা বা গমের ক্ষেত্রে ১১৫ টাকা।জবের ক্ষেত্রে ৩৯৬ টাকা।
কিসমিসের ক্ষেত্রে ১৬৫০ টাকা।
খেজুরের ক্ষেত্রে ১৯৮০ টাকা।
এবং পনিরের ক্ষেত্রে ২৬৪০ টাকা।২০২৩ সালে বাংলাদেশের ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা।ও সর্বোচ্চ ২৬৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
২০২৪ সালের সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে হার।
রমজানে এ বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ফিতরার জন প্রতি ফিতরার সর্বনিম্ন১১৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।আর সর্বোচ্চ ফিত্রার হার হবে ২৯৭০ টাকা।
টাকা দিয়ে যাকাতুল ফিতর আদায় হবে কিনা
রমজানের পরিশুদ্ধতার জন্য সাদকাতুল ফিতর আদায় করা জরুরী।হাদিসে খাবার দিয়ে ফিতর আদায় করার কথা থাকলেও বাংলাদেশের দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই সাদকাতুল ফিতর আদায় করে টাকা দিয়ে।বহুকাল ধরে প্রচলিত এর রীতির বাইরে যেতে চান না কেউ।যিনি ছাত্রাতুল ফিতর গ্রহণ করছেন তিনিও টাকা ছাড়া খাবার নিতে চান না।
অথচ হাদিসের ভাষ্যমতে সাদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে খাবার দিয়ে।রোজার পরিশুদ্ধতার জন্য যাকাতুল ফিতর আদায় করা ফরজ।প্রত্যেক হাদিসে খাদ্য দ্রব্য দ্বারা সাদকাতুল ফিতর আদায় করার কথা বলা হয়েছে।কিন্তু বাংলাদেশের দীর্ঘকাল ধরে টাকা দিয়ে সাদকাতুল ফিতর আদায় করার রীতি প্রচলিত আছে।
টাকা দিয়ে ফিতর আদায় করলে ফিতর হবে না এটা বলা আমাদের মত সাধারন মানুষের পক্ষে সম্ভব না।তবে ইমাম আবু হানিফা (রা) আল্লাহ আনহু এর মতে টাকা দিয়ে ফিতর আদায় করলেও ফিতর হয়ে যাবে।কিন্তু বিশুদ্ধ হাদিস মতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে দিহরাম বা দিনারের প্রচলন থাকা সত্ত্বেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম কখনো টাকা দিয়ে যাকাতুল ফিতর আদায় করে নিই।
এখানে ক্লিক করুনঃ২০২৪ সালের সেহরি ও ইফতারে সময়সূচী
পরবর্তী সাহাবায়ে কেরামের মত অনুযায়ী টাকা দিয়ে ফিতর আদায়ের পরিচালন শুরু হয়।যা বাংলাদেশে এখনও লক্ষ্য করা যাই।আল্লাহতালা সূরা হাশরের ৭ নং আয়াতে বলেন রাসূল তোমাদের যা দেন তা গ্রহণ করুক আর যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো।অনেকের প্রশ্ন থাকে রাসূল তো টাকা দিয়ে ঈদের আদায় করতে নিষেধ করেননি।
তার উত্তরে বলব রাসূল যা করতে নিষেধ করেননি তার আগে প্রাধান্য পাবে যা তিনি আদেশ করেছেন।রাসুলের হাদিস দ্বারাই প্রমাণ হয় খাদ্য দ্রব্য দিয়ে আদায় করতে হবে।বেশিরভাগ আলেম এর মতই খাদ্যদ্রব্য দাঁরায় ফেতের আদায় করা উচিত।হানাফী মাযহাবের মতে টাকা দিও ফিতরা আদায় হয়ে যাবে।তবে আমি বলব সন্দেহের হাত থেকে বাঁচতে পূর্ণাঙ্গ হাদিস অনুসরণ করা উচিত।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকের এই কনটেন্টের ফেতের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।এবং আজকের এই আর্টিকেলে ২০২৪ সালের ফিতর সর্বোচ্চ কত এবং সর্বনিম্ন কত এ সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।তাই আজকের এই কনটেন্ট থেকে যদি কেউ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত লোকদের সাথে শেয়ার করবেন।যাতে করে আপনার পরিচয় লোকজনও উপকৃত হতে পারে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url