সদাকাতুল ফিতর কি ফিতরা কখন দিতে হয়

প্রিয় পাঠক সাদকাতুল ফিতর কখন ওয়াজিব হয়।এ সম্পর্কে যারা জানতে চাচ্ছেন কিন্তু বিভিন্ন ওয়েবসাইট খোঁজাখুঁজি করার পরেও জানতে পারতেছেন না তাদের জন্য আজকের এই কন্টেন্ট।আজকের এই কনটেন্টে সাক্ষাতুল ফিতর কেন দিতে হবে।সাদকাতুল ফিতর দিলে এর ফজিলত কি।
সদকাতুল ফিতর কি ফিতরা কখন দিতে হয়
এবং এই সাদকাতুল ফিতর দেওয়ার কারণ কি এ সম্পর্কে আজকের এই কন্টেন্টে আলোচনা করা হবে।এবং সাদকাতুল ফিতর কি ভিতরা কখন দিতে হয়।এ সম্পর্কে জানতে হলে আজকের এই কনটেন্টি পুরোটাই মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে অবশ্যই আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারবেন।

ভূমিকা

সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার বিধান চালু হয় দ্বিতীয় হিজরিতে।রাসুলুল্লাহ সাঃ শিশু প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষ স্বাধীন এবং ক্রীতদাস সহ সকল মুসলমানদের ওপর সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ফরজ করেছেন।সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো খেজুর এবং গমের ক্ষেত্রে এক সা বা প্রায় তিন কেজি।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।


মুসলিম নারী-পুরুষ ছোট বড় আজাদ গোলাম সকলের ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রাসূল সাঃ রমজান মাসে আজাদ গোলাম নারী পুরুষ ছোট-বড় সকল মুসলমানের ওপর এক সা খেজুর বা এক সা জব সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন।ফেতেরা দেওয়ার কারণ হলো,রোজা রাখার মধ্য দিয়ে রোজাদারের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি তার অনিচ্ছা সত্বেও অনেক সময় হয়ে যায়।

কিছু সাগিরা গোনা অনেক সময় অনিচ্ছা সত্ত্বেও হয়ে যায়।এই ত্রুটি বিচ্যুতির কাফফারা হিসাবে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদেরকে ফিতরার ব্যবস্থা করেছেন।এই ফিতরা যদি কোন রোজাদার সঠিকভাবে আদায় করে,তাহলে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা তার ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমা করে তার সিয়াম সাধনা কবুল করে নেই।
  • কখন সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন
  • ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
  • সদকাতুল ফিতর কখন ওয়াজিব হয়
  • সদাকাতুল ফিতর কি ফিতরা কখন দিতে হয়
  • ফিতরা কত কেজি করে দিতে হবে

কখন সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন

রাসুলুল্লাহ সাঃ শিশু প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষ স্বাধীন এবং ক্রীতদাস সহ সকল মুসলমানদের ওপর সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ফরজ করেছেন।সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো খেজুর এবং গমের ক্ষেত্রে এক সা বা প্রায় তিন কেজি।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সা হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর যুগে প্রচলিত পরিমাপক পাত্র,যা ছিল কোটা,পট বা মগ আকৃতির।এই কৌটা দিয়ে পাকা গম মাপা হলে ওজন হবে দুই কেজি ৪০ গ্রাম।আর খেজুর মাপা হলে ওজন হবে দুই কেজি ৪০০ গ্রাম।সাহাবায়ে কেরাম পণ্য কেনা বেজার সময় এ পাত্র ব্যবহার করতেন।কিন্তু বাড়িঘরে রান্নাবান্না করার সময় হাতে পরিমাপ করে রান্না বান্না করতেন।

মোনাজাতের সময় দুই হাত একত্রিত করলে যতটুকু শস্য ধারণ করা যায, এরকম চার কোষে এক ছা হত।কিন্তু এভাবে চার কোষে এক সা ধরা হলে তা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহৃত সা চেয়ে পরিমাণে বেশি হয়ে যেত।তখন এর ওজন হতো তিন কেজি ৩০০ গ্রাম।তাই অনেক আলেম ২ কেজি ৪০ গ্রাম থেকে ২ কেজি ৪০০ গ্রাম এবং তিন কেজি ৩০০ গ্রামের মধ্যে সমন্বয় করে বলেন,এক সা হলো প্রায় তিন কেজি।

ফিতরা কার উপর ওয়াজিব

সাদকাতুল ফিতর কার কার উপর ওয়াজিব চলুন জেনে নেওয়া যাক।মুসলিম নারী-পুরুষ ছোট বড় আজাদ গোলাম সকলের ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,রাসূল সাঃ রমজান মাসে আজাদ গোলাম নারী পুরুষ ছোট-বড় সকল মুসলমানের ওপর এক সা খেজুর বা এক সা জব সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন।এক সার পরিমাণ ২ কেগি ৪০গ্রাম এর আশেপাশে।

সুপ্রিয় ভিউয়ার সাদকাতুল ফিতর নাবালকদের পক্ষ থেকে তার পিতামাতা আদায় করবে।অর্থাৎ নাবালকদের পক্ষ থেকে তার পরিবার তার পিতা-মাতা সাদকাতুল ফিতর আদায় করে নেবে।পেটের বাচ্চা অর্থাৎ এখনো পৃথিবীতে আসেনি তার ক্ষেত্রে সাক্ষাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব হবে না।যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আদায় করে তাহলে সেটা নফল সাতকা হিসাবে আদায় করা হবে।অর্থাৎ পেটের বাচ্চার ক্ষেত্রে ছাদকাতুল ফিতর দেওয়া ওয়াজিব নয়।


তবে কেউ যদি আদায় করে তা নফল সাদকা হিসাবে গণ্য হবে।ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু পেটের বাচ্চার পক্ষ থেকেও সাদকাতুল ফিতর আদায় করতেন।ফিতরা নিজের পক্ষ থেকে এবং নিজের পরিবারবর্গের পক্ষ থেকেও আদায় করতেন।যেমন স্ত্রী ও সন্তান।যদি তাদের নিজস্ব সম্পদ থাকে তাদের সম্পদ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে।এটি ইসলামের নিয়ম।প্রিয় ভিউয়ার্স আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

সদকাতুল ফিতর কখন ওয়াজিব হয়

সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার বিধান চালু হয় দ্বিতীয় হিজরিতে।কিন্তু আমরা প্রতি বছর রমজান মাসে যে সাদকাতুল ফিতর আদায় করি এই সাদকাতুল ফিতরা ওয়াজিব হয় কখন এ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।রাসুলের সাল্লাম সাদকাতুল ফিতর আদায় করতে বলেছেন ঈদের দিন ঈদের নামাজে বের হওয়ার আগে আগে।সুতরাং কোন ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে যদি জন্মগ্রহণ করেন তার ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে।এবং ঈদের নামাজের আগেও যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তার ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।

সদাকাতুল ফিতর কি ফিতরা কখন দিতে হয়

ফেতেরা দেওয়ার কারণ হলো,রোজা রাখার মধ্য দিয়ে রোজাদারের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি তার অনিচ্ছা সত্বেও অনেক সময় হয়ে যায়।কিছু সাগিরা গোনা অনেক সময় অনিচ্ছা সত্ত্বেও হয়ে যায়।এই ত্রুটি বিচ্যুতির কাফফারা হিসাবে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদেরকে ফিতরার ব্যবস্থা করেছেন।এই ফিতরা যদি কোন রোজাদার সঠিকভাবে আদায় করে,তাহলে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা তার ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমা করে তার সিয়াম সাধনা কবুল করে নেই।

আর হচ্ছে গরিবদের জন্য এক বেলা খাবার ব্যবস্থা হবে।ইসলাম তো ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।আমার আল্লাহতালা চাইনা আমার কোন বান্দা ঈদের দিনে না খেয়ে থাকুক।যার ফলে ঈদের আগে ফিতরা আদায় করে দেবেন।তাহলে অন্তত গরিব দুঃখী অসহায় মানুষদের ঈদের দিনে যেন না খেয়ে থাকতে না হয।তারা যেন ফিতরের দিয়ে ভালো মন্দ কিছু খেতে পারে।আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ফিতরার ব্যবস্থা করেছেন।সাদাকাতুল ফিতর কি ফেতেরা কখন দিতে হয়।

ঈদুল ফিতরের দিন যে ব্যক্তির মালিকানাই নিশাপ পরিমাণ সম্পদ থাকে আর তা নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু থেকে অতিরিক্ত হবে তার উপর আল্লাহতালা সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন।সাদকাতুল ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।সাদাকাতুল ফিতরের যাদের আদায় করা যাবে ,গম আটা কিসমিস খেজুর পুনির।উক্ত বস্তু দ্বারা সাদকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে।আবার তার সমমূল্য দাঁড়াও আদায় করা যাবে।

এক্ষেত্রে স্মরণ রাখতে হবে যে সাদকাতুল ফিতরের উক্ত পরিমান দান নিজ পক্ষ থেকে এবং নিজ ও প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে দিতে হবে।স্ত্রী এবং ঘরের অন্যান্য সদস্যের পক্ষ থেকে দেওয়া ওয়াজিব নয়।যদি তাদের অনুমতিক্রমে আদায় করে দেয় তাহলে আদায় হয়ে যাবে।

সাদকাতুল ফিতর কাকে দিবেন।
যারা যাকাত নিতে পারবেন তারাই সাদাকাতুল ফেরত পাওয়ার উপযুক্ত।তবে সমাজের গরীব অনাথ দরিদ্র এবং নিজের গরিব আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীকে দেওয়াই বেশি উত্তম।কেননা হাদিস শরীফে বলা হয়েছে সাদকাতুল ফিতর হল গরিবদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা।অর্থাৎ সাদাকাতুল ফিতর গরিব অনাথকে দিয়েই ঈদের আনন্দকে তাদের সাথে শামিল করবে।এটাই হবে সাথেকাতুল ফিতরের উদ্দেশ্য।

সাদাকাতুল ফিতর কখন দিবেন।
ঈদের দিন সকালে ফিতরা দেওয়া সুন্নত।নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ঈদের নামাজে বের হওয়ার পূর্বে সাদকাতুল ফিতর দেওয়ার নির্দেশ দিতেন।ফলের সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয় ঈদের দিন সুবহে সাদিক হওয়ার পরপর।হাদিসের ভাষ্যমতে সুবহে সাদিকের পর থেকে ঈদের নামাজের আগে দায় উত্তম।তবে এ সময় দেওয়া সম্ভব না হলে এর আগে বা পরের দেওয়া যাবে।

ফিতরা কত কেজি করে দিতে হবে

ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় যার নিকট যাকাত ফরজ হওয়া পরিমাণ অর্থ সম্পদ থাকবে তার উপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।যাকে যাকাত দেওয়া যাই তাকে ফিতরা দেওয়া যাই।গম আটা জব অন্য খাদ্যশস্য যেমন ধান গম কালা ইত্যাদি দ্বারা ফিতরা আদায় করতে চাইলে উপরোক্ত পরিমাণের যে মূল্য হয় তা দিতে হবে।


চলতি বছর ফিতর হার জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২৯৭০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।ইসলামিক অনুশাসনের এক অনন্য নিদর্শন ফিতরা।সাদকাতুল ফিতর দ্বিতীয় হিজরীতে শাবান মাসে বিধিবদ্ধ হয়।এটি অসহায় গরিব দুঃখীর ন্যায্য পাওনা।ফিতরার মধ্যে আছে গরিব দুঃখীর আনন্দ ও ঈদ উৎসব।ইসলামিক শরীয়ত মতে জব কিসমিস খেজুর পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর মাধ্যমে যেকোনো একটি দিয়ে ফিতরা প্রদান করা যায়।

(১)আটা দিয়ে ফিতরা আদাই করলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রামের বাজার মূল্য ১১৫ টাকা।প্রদান করতে হবে জন প্রতি।
(২)জব দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রামের বাজার মূল্য ৪০০ টাকা।
(৩)খেজুর দিয়ে আদায় করলে তিন কেজি ৩০০ গ্রামের বাজার মূল্য ২৪৭৫ টাকা।
(৪)কিসমিস দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রামের বাজার মূল্য ২১৪৫ টাকা এবং।
(৫)পুনির দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রামের বাজার মূল্য ২৯৭০ টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।

দেশের সব বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা জব খেজুর কিসমিস ও পনিরের বাজার মূল্যের ভিত্তিতেই এই ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।মুসলমানরা ওই পণ্যের যেকোনো একটি পণ্য দিয়ে অথবা তার বাজার মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে পারবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকের এই কনটেন্টে সাদকাতুল ফিতর সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।সাদকাতুল ফিতর গরীব মিসকিন অসহায় মানুষের হক।এই সাদকাতুল ফিতর এর আগে আগে আদায় করে দেয়া ওয়াজিব।তাই আজকের এই কনটেন্টটি মুসলমান ভাইবোনদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তাই আজকের এই কন্টেন্ট থেকে যদি কোন মুসলমান ভাই ও বোন উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত লোকদের সাথে শেয়ার করবেন।যাতে করে তারা উপকৃত হতে পারে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url